সন্দীপ গোস্বামীর দর্শন সন্দীপনী
"আনুমানিক পাঁচ হাজার বছর আগে শ্রীকৃষ্ণ বলেছিলেন 'আমিই ভগবান', দুই হাজার বছর আগে যীশুখৃষ্ট বলেছিলেন, 'আমি ভগবানের পুত্র', দেড় হাজার বছর আগে হজরত মহম্মদ বলেছিলেন, 'আমি ভগবানের দূত'। মনীষীদের মধ্যে কোন ভেদাভেদ নেই, তাহলে অনুসরণকারীদের মধ্যে এত বিভেদ কেন!!!" সন্দীপ গোস্বামী
"মানুষটি আকাশ ছূঁতে চেয়েছিল, এখন নিজেই আকাশ হয়ে গেছে। আকাশ কি শুধু আমাদের মাথার উপরে থাকে! যার নাম নীলাকাশ। আকাশ মাটিতেও থাকে, যার নাম সবুজ আকাশ। আকাশ থাকে পাতালে, আকাশ থাকে অন্তরে...আকাশ একটি বোধ, যে বোধ মানুষকে স্বপ্ন দেখায়, ঘুম পাড়ায়, কখনও মুক্তি হয়ে ওঠে...আকাশ সেই সত্য, যেখানে আমরা গড়ে তুলি শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসার স্বর্গ।" সন্দীপ গোস্বামী
"কুৎসিত মনের মানুষ কখনও সুন্দর হোতে পারেনা, তেমনি সুন্দর মনের মানুষ কখনও কুৎসিত হোতে পারেনা। সৌন্দর্যের প্রতীক একমাত্র মানুষের মন। যার মন যেমন তার রূপ তেমন, আজ না হোক কাল এটাই প্রমাণিত সত্য হয়ে প্রকাশ পায়।" সন্দীপ গোস্বামী
"রবীন্দ্রসংগীত সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয়, কবির কবিতা, ছোটগল্প, উপন্যাস, নাটকের জনপ্রিয়তা প্রবল, কবির চিত্রকলার প্রশংসা খুব শুনতে পাই। তবু আমি বিশ্বাস করি, কবির শ্রেষ্ঠতম সৃষ্টি তাঁর মৌলিক, উত্তরাধুনিক প্রবন্ধসাহিত্য। শুধু এই প্রবন্ধগুলি যদি একজন মানুষ আত্মস্থ করতে পারেন, তবে তিনি জগতের অর্ধেক জ্ঞান অতিসহজে নিজের করে নিতে পারেন। কী মহান দান!" সন্দীপ গোস্বামী
"যেদিন মানুষ বুঝতে পারবে যে সে শুধুমাত্র মানুষের আত্মকেন্দ্রিক অহমিকায় সৃষ্টি একটি দেশের নাগরিক মাত্র, অথচ প্রকৃতপক্ষে সে এই পৃথিবীর বাসিন্দা। এই পৃথিবী তার আসল মাতৃভূমি। বিশ্ববাসী তার জন্মগত আত্মীয়। পৃথিবীর সমস্ত সম্পদ প্রকৃতি বিশ্ববাসীর মঙ্গলের জন্য নির্মাণ করেছে। অথচ কিছু মানুষের চতুরতায় সে আজ বঞ্চিত। ভিন্ন ভিন্ন দেশ নয়, ভিন্ন ভিন্ন গ্রহ তার প্রতিবেশি। প্রকৃতি বারবার ম্যানমেড সীমানা মুছে দিয়ে বলে, ওরে তোরা মানুষ হ! রাষ্ট্রবাদী নয়, মানবতাবাদী হোয়ে ওঠ!" সন্দীপ গোস্বামী
"নীরবতা অনেক কথা বলে। সেই কথা শুনতে কান নয়, চাই আস্ত একটি হৃদয়! সেই হৃদয়ে বেজে ওঠে নিসর্গের সংগীত, মহাজাগতিক অর্কেস্ট্রা!" সন্দীপ গোস্বামী
"শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর জীবন চরিত থেকে কত মানুষ কত কিছু নিরন্তর শিখে চলেছে। কেউ খুঁজে পায় ভক্তি আন্দোলন, কেউ তাঁর আদর্শের অনুসারী হয়ে ওঠে। কেউ মহাপ্রভুর শিক্ষায় নবজাগরণ দেখতে পায়, কেউ পায় রাধারাণীর বিরহ অশ্রু...তবে আমি কেন অনুভব করি অন্যকিছু! তিনি যেন বারবার আমাদের ভালোবাসতে শেখাচ্ছেন, শেখাচ্ছেন ভালোবাসা কিভাবে নিষ্কাম প্রেমে রূপান্তরিত হয়। নিজেকে ভালোবাস, জগতকে ভালোবাস, ভালোবাসায় ভরে যাক এই অমূল্য মানবজীবন...কি সুন্দর তাই না!" সন্দীপ গোস্বামী
"ইতিহাস দুইভাবে লেখা হয়। প্রথমটি কোন জাতির বা মানুষের উল্লেখযোগ্য কর্ম, আত্মত্যাগ, মেধা ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে লেখা হয়, যা স্বাভাবিক ইতিহাস। দ্বিতীয়টি লিখিত হয় চলমান ইতিহাসকে অস্বীকার করে, অসম্মান করে। অজ্ঞ বা জ্ঞানীরা লিখতে চায় নতুন ইতিহাস। ইতিহাস রচনায় এই দুই ধরনের প্রচেষ্টা যুগে যুগে চলে আসছে। সত্যের মধ্যে মিথ্যা, মিথ্যার মধ্যে সত্য । এই অর্ধসত্য ইতিহাস অধ্যয়ন করে কেউ গবেষক হন, কেউ অধ্যাপক! তাই ক্ষমতা বারবার নতুন ইতিহাস লেখার চেষ্টা করে, বদলায় শহরের নাম, রাস্তার নাম, স্টেশনের নাম এমনকি ভগবানের নাম....এমন শক্তিশালী আমরা! কালকে অস্বীকার করে লিখে ফেলি মহাকালের কাহিনী...যা ইতিহাস নয় শুধুই আখ্যান!" সন্দীপ গোস্বামী
"প্রত্যেক মানুষের নিজস্ব স্তর বা লেভেল আছে । সেই লেভেলের নীচে সে নামতে পারে না, নামা উচিতও নয় । যারা সব স্তরের মানুষের সাথে মিশতে পারেন, তারা হয় কবি, নয় ব্যক্তিত্বহীন মানুষ ।" সন্দীপ গোস্বামী
"ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জীবন যেমন সাগরের মতো বিস্তৃত, ঢেউ হয়ে ভিজিয়ে দেয় বছরের পর বছর মানুষের মননশীল আবেগকে...তবু তাঁর দুইচোখ থেকে কখনও ঝরে পড়ে আদর্শ পুরুষের অশ্রু...সেই অশ্রুকে না জানলে, অনুভব না করলে অপূর্ণ থেকে যায় বাঙালির বিদ্যাসাগর চর্চা..." সন্দীপ গোস্বামী"ইতিহাস দুইভাবে লেখা হয়। প্রথমটি কোন জাতির বা মানুষের উল্লেখযোগ্য কর্ম, আত্মত্যাগ, মেধা ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে লেখা হয়, যা স্বাভাবিক ইতিহাস। দ্বিতীয়টি লিখিত হয় চলমান ইতিহাসকে অস্বীকার করে, অসম্মান করে। অজ্ঞ বা জ্ঞানীরা লিখতে চায় নতুন ইতিহাস। ইতিহাস রচনায় এই দুই ধরনের প্রচেষ্টা যুগে যুগে চলে আসছে। সত্যের মধ্যে মিথ্যা, মিথ্যার মধ্যে সত্য । এই অর্ধসত্য ইতিহাস অধ্যয়ন করে কেউ গবেষক হন, কেউ অধ্যাপক! তাই ক্ষমতা বারবার নতুন ইতিহাস লেখার চেষ্টা করে, বদলায় শহরের নাম, রাস্তার নাম, স্টেশনের নাম এমনকি ভগবানের নাম....এমন শক্তিশালী আমরা! কালকে অস্বীকার করে লিখে ফেলি মহাকালের কাহিনী...যা ইতিহাস নয় শুধুই আখ্যান!" সন্দীপ গোস্বামী
"ভক্তের কাছে তিনি ভগবান শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু। আবার গবেষকদের কাছে, তিনি বিশ্বে অন্যতম শ্রেষ্ঠ সমাজ সংস্কারক। এমন মহৎ উদাহরণ পৃথিবীতে নেই।"সন্দীপ গোস্বামী
"যদি দেখ কোন ব্যক্তির থেকে আঘাত পেয়ে তোমার চোখে জল এসে গেছে, কিন্তু বুকে আগুন জ্বলছে না । জেনে রেখো, সেই ব্যক্তিকে তুমি অসম্ভব ভালবাস । আবার যদি দেখ, কাউকে বারবার আঘাত দিলেও সে প্রত্যাঘাত করছে না, জেনে রেখো সে তোমায় অসম্ভব ভালোবাসে নয়তো তোমার চরম সর্বনাশ করার জন্য অপেক্ষা করছে ।" সন্দীপ গোস্বামী
"মানুষ বিচিত্র কারণে বই পাঠ করে, কেউ বৃহৎ বৃহৎ বই মুখস্থ করে কর্মজীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। এই মহাপরিশ্রমের পিছনে বইয়ের প্রতি ভালোবাসার থেকে অনেক আকর্ষণ ভবিষ্যতের স্বচ্ছলতা! কেউ সময় কাটানোর জন্য বই পড়েন, কেউ পণ্ডিত সাজার জন্য কোটেশন মুখস্থ করে। নির্মল আনন্দ এবং জ্ঞানের জন্য কেউ প্রাচীন গ্রন্থ পাঠ করেন। কেউ পড়েন কম, লেখেন অনেক বেশি। বই অনেকটা কাকের মতো আমাদের মস্তিষ্কে নিরন্তর জমতে থাকা আবর্জনা প্রতিনিয়ত পরিস্কার করতে থাকে...বিশ্বের সব বই যদি নষ্ট হয়ে যায়, বিশ্ববাসী হয়ে যাবে প্রকৃত অন্ধ...." সন্দীপ গোস্বামী
"জীবন রহস্যময় ! রহস্যময় এই জীবনের গভীরে লুকিয়ে থাকে সরলতা, ভালোবাসা, অশ্রু । জীবনের বহিরঙ্গে যার ছোঁয়া পাওয়া দুষ্কর । দার্শনিক ব্যাখ্যা অনেক থাকলেও জীবনকে বুঝতে হয় জীবন দিয়ে, প্রাণের সাথে প্রাণের মেলবন্ধনে জীবন হয়ে ওঠে প্রাণময় । মিথ্যা দিয়ে আমরা গড়ে তুলি ক্ষমতাবান, কিন্তু সত্যের আলোয় সে হয়ে যায় ধুলোবালি । আবার পৃথিবীর পথ হাঁটতে হাঁটতে মানুষের স্মৃতিতে থেকে যান কেউ কেউ, যাদের সামাজিক বিচারবুদ্ধি দিয়ে মূল্যায়ন করা যায় না । প্রাণের সাথে প্রাণ মিলিয়ে জানা যায় সেইসব মানুষের অনুভুতি, বিচার, সংস্কার ।" সন্দীপ গোস্বামী, তিনশো সন্দীপনী ও পথ
"শিশুরা পৃথিবীকে দু'টি দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে শুরু করে । একটি মায়ের দৃষ্টিকোণ, যেখানে পৃথিবী খুব সুন্দর ঠিক তার মায়ের মতো । আর একটি হল পিতার দৃষ্টিকোণ, যেখানে পৃথিবী অস্তিত্বের জন্য সংগ্রামে ব্যস্ত। এরপর শিশুটি শিক্ষিত হতে থাকে, সে কবি, সাহিত্যিকদের দৃষ্টিকোণ থেকে পৃথিবীকে দেখতে শুরু করে । যে পৃথিবী প্রতিনিয়ত ভিন্ন ভিন্ন রূপে আত্মপ্রকাশ করতে থাকে । খুলতে থাকে শিশুর চোখ, উন্মোচিত সেই দৃষ্টিতে সে দেখতে থাকে নিজের পৃথিবী যা তার একান্ত নিজস্ব । ধীরে ধীরে সে পরিণত মানুষে রূপান্তরিত হতে থাকে । মৃত্যুর আগে পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া চলতেই থাকে ।" সন্দীপ গোস্বামী
"যখন অন্ধকারে ডুবে যাবে তোমার চারদিক, ভয় পেও না । চোখ বুজে তিনবার বোল 'মা' । তোমার মা যেখানেই থাকুন, শুনতে পাবেন তোমার ডাক । তোমার কানে ভেসে আসবে 'সোনা, আমি আছি তোর সাথে…" সন্দীপ গোস্বামী
"যে মানুষ সারাজীবন ধরে মাতা-পিতা, মাতৃভূমি, মাতৃভাষা এবং মানুষকে ভালবাসতে পারে, পরমপিতার আশীর্বাদে তার জীবনে সমস্ত প্রতিকূলতা অনুকূল হয়ে যায় এবং তার জীবন পরমশান্তিতে অতিবাহিত হয় ।" সন্দীপ গোস্বামী
"চেনাজানা মানুষের মধ্যে জনপ্রিয় হোতে লাগে কৌশল। অচেনা, অজানা মানুষের মধ্যে জনপ্রিয় হোতে লাগে ক্যারিশমা। কৌশল এবং ক্যারিশমার প্রকৃতি সর্বদা বিপরীতমুখী।" সন্দীপ গোস্বামী
"এই সময়ের পৃথিবীতে তুমি দুটি জিনিস অন্যদের থেকে পাবে । হিংসা অথবা করুণা । তোমার সফলতায় হিংসা এবং ব্যর্থতায় করুণা । তাই দুঃখ পেও না । করুণা নিয়ে বেঁচে থাকা অর্থহীন । তুমি ভালোবাসার রাজা বা রাণী হয়ে ভালোবাসা বিলিয়ে যাও, ভালোবাসার ভিখারি হতে চেও না । একদিন তোমার ভালোবাসায় লেখা হবে মানবজাতির ভবিষ্যৎ, তুমি হবে ইতিহাস ।" সন্দীপ গোস্বামী
"ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সান্নিধ্য হৃদয়ে পরমানন্দ সৃষ্টি করে । সর্বাঙ্গে আনন্দের ঢেউ খেলতে থাকে । অথচ শ্রীচৈতন্যের সান্নিধ্য অন্তরে প্রবল দহন সৃষ্টি করে । দুই নয়ন ভেসে যায় বেদনার অশ্রুতে...শ্রীকৃষ্ণের চেয়ে শ্রীচৈতন্যকে আত্মস্থ করা কয়েক কোটি গুণ কঠিন ।" সন্দীপ গোস্বামী
"কন্যা হয়ে জন্মানো গর্হিত অপরাধ! তাহলে পুরুষ হয়ে জন্মানো কি মহাপুণ্য! নারীরা নারীদের ভালোবাসবে, পক্ষে থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু পুরুষের পক্ষে কোন পুরুষ চোখে পড়েনি! শিশুবেলায় একজন পুরুষ মাকে পিতার চেয়ে কয়েকশো গুণ বেশি ভালোবাসে, আপন করে নেয়। যৌবনে স্ত্রীর দুইহাত জড়িয়ে ধরে বেঁচে থাকে। কন্যাসন্তান তার নয়নের মণি। দুইহাত তুলে আশীর্বাদ করে, "মা, তুই রাজরাজেশ্বরী হবি। " সেই পিতা পুত্রসন্তানকে অভিশাপ দেয়,"তোর কপালে চরম যন্ত্রণা আছে।" অবশ্য আশীর্বাদ সুপার ফ্লপ হয়, কিন্ত অভিশাপ চূড়ান্ত সফল হয়। তাই মৃত্যুর আগে পর্যন্ত পুরুষ গাধার জীবন নিয়ে কাটিয়ে যায়। একা, একমেবদ্বিতীয়ম!" সন্দীপ গোস্বামী
"অনেক সময় কিছু না বলাও অনেক কিছু বলা...জীবন বড় অদ্ভুত এবং অপূর্ব! আমরা খণ্ডকে নিয়ে এগিয়ে চলি সমগ্রের দিকে, সম্পূর্ণের আশায়...একসময় খণ্ড খণ্ড জীবনবোধ মিলে সৃষ্টি হয় সমগ্র মানবজাতির জীবনবোধ... সেই জীবনবোধ বিচিত্ররূপে শোনায় সম্পূর্ণভাবে মানুষের জীবনবৃত্তান্ত। লেখা হয় মানুষের সাহিত্য...আমরা কেউ মিথ্যা নই, সবাই সত্য...সত্যান্বেষী!" সন্দীপ গোস্বামী
"নিম্নশ্রেণীর মানুষের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল, এরা শুধু নিজের ভালো চায় না, একইসাথে অন্যের ক্ষতিও প্রবলভাবে চায়। কি অদ্ভুত মনোবৃত্তি!" সন্দীপ গোস্বামী
"ভগবান শ্রীকৃষ্ণ গবেষণার বিষয় নয়, উপলব্ধির বিষয় । তাই গবেষণায় বিভিন্ন কৃষ্ণ নামের ব্যক্তি উঠে আসে, কিন্তু উপলব্ধিতে এক এবং অদ্বিতীয় শ্রীকৃষ্ণকে খুঁজে পাই ।" সন্দীপ গোস্বামী
"ঈশ্বরের কাছে একটাই প্রার্থনা, নতুন কিছু তোমার কাছে চাই না । শুধু যা দিয়েছ তা কেড়ে নিও না প্রভু ।" সন্দীপ গোস্বামী
"অনাহার দুই প্রকার। এক, যাদের পেট ভরা অথচ খিদে মেটে না। এদের মধ্যে কাউকে দেখেছি বিরিয়ানি খেতে খেতে মেহনতি মানুষের ঐক্য লেখে! এদের বলে আঁতেল! আর এক, যারা হাসি মুখে সারাদিন পরিশ্রম করে পরিবারের অন্নসংস্থান করে। এঁরা মেহনতী মানুষ, প্রকৃতির সন্তান। এঁদের সমস্ত সমস্যার কারণ আমরা, আমরা কোনদিন অন্তর থেকে চাইনি যে ওরা আমাদের মতো নকল খিদে নিয়ে জীবন কাটাক। ওরা আমাদের মতো মিথ্যাচার করুক!" সন্দীপ গোস্বামী
"আমায় যদি একটু বুঝতে পার, তবে আমায় কোনদিন ভুলতে পারবে না । আমায় যদি খুব বেশি বুঝে থাক, তবে আমার প্রেমে পড়ে যাবে । বোঝার চেষ্টাই মানুষকে ভালবাসতে শেখায় ।" সন্দীপ গোস্বামী
"রবীন্দ্রসাহিত্যকে মানব অনুভূতির মিউজিয়াম বলা যায়, যা মানুষের লুপ্তপ্রায় অনুভূতিকে পুনর্জীবন দান করে ।" সন্দীপ গোস্বামী
"পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠ জ্ঞান নিজেকে ভালোবাস এবং জগৎসংসারকে ভালোবাস। এই জ্ঞান যিনি অর্জন করেছেন তিনি মহাজ্ঞানী, তাঁর আর কোন জ্ঞানের প্রয়োজন নেই।" সন্দীপ গোস্বামী
"পৃথিবীতে সবচেয়ে শক্তিশালী ভাষা হল অনুভূতির ভাষা । এই ভাষায় দক্ষতা মানুষকে মানবিক করে ।" সন্দীপ গোস্বামী
"জিনিয়াস এবং ট্যালেন্টের মধ্যে বেসিক পার্থক্য হল, ট্যালেন্ট তার ক্ষমতার সর্বোচ্চ ১০০% দিতে পারে, আর জিনিয়াস অসীম। ট্যালেন্টের পরীক্ষার রেজাল্ট পিতা, মাতা, শিক্ষকদের আশানুরূপ হয়। কিন্তু জিনিয়াস সর্বদা প্রথাগত পরীক্ষায় এমন রেজাল্ট করে যা সবাইকে ভালো বা মন্দ, দুই দিক থেকে চমকে দেয়! ট্যালেন্ট খুব বুদ্ধিমান হয়, তাই এরা জীবনে নিশ্চিত সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। অথচ জিনিয়াস খুব মুডি হয়, এরাই স্বনামধন্য নোবেলজয়ী বা পাগলাটে কবি,সাহিত্যিক, শিল্পী হয়ে নতুন ইতিহাস লেখে।" সন্দীপ গোস্বামী
"তুমি ভালো আছ তাই আমার অস্বস্তি হচ্ছে, এর নাম পরশ্রীকাতরতা। আমি তোমার কাছে থেকে ভালো থাকতে চাই, এর নাম মায়া। তুমি ভালো আছ এটাই আমার আনন্দ, এর নাম ভালোবাসা।" সন্দীপ গোস্বামী
"আমার ঈশ্বর মন্দির, মসজিদ, গির্জায় থাকেননি, তিনি থাকেন বিদ্যালয়ে, রক্তদান শিবিরে, ফুলের বাগানে, পাঠাগারে, শিশুর হাসিতে,মানুষের মেলায়, ভালোবাসায়, আনন্দে, স্নেহে, শ্রদ্ধায়, অন্তরাত্মায়..." সন্দীপ গোস্বামী
"সৎপথে চলার উপদেশ অনেকেই দিয়ে থাকেন, কিন্তু সৎপথ কাকে বলে এটা পরিষ্কার করে কেউ বলেন না । আমার কাছে সৎপথ হল, এমন খাদ্য খেতে হবে যার মধ্যে শরীরের উপযোগী খাদ্যগুণ থাকে, এমন পোশাক পরতে হবে যা অন্যকে লজ্জা দেবে না, এমন বাড়ি বানাতে হবে যার ভিত মজবুত হয়, এমন গ্রন্থ পড়তে হবে যার থেকে আলোকিত হওয়া যায়, এমন কর্ম করতে হবে যা সমাজের সবচেয়ে দুর্বল মানুষেরও মঙ্গল করবে, সংসারে পিতা-মাতাকে শ্রদ্ধা, স্ত্রী বা স্বামীকে ভালবাসা এবং সন্তানকে স্নেহ করতে হবে, মহিলাদের সামনে নম্রতার সাথে কথা বলতে হবে, দেশের আইনকে প্রবল শক্তিশালী ভেবে শ্রদ্ধা করতে হবে, নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে এবং ভালবাসতে হবে ।" সন্দীপ গোস্বামী
"অনেকে ভাবেন পুরুষেরা কাঁদতে পারেনা, পুরুষদের কোন অনুভূতি নেই। কেউ ভাবেন পুরুষদের কাঁদতে নেই, পুরুষ হৃদয়কে পাষাণ হতে হয়। এরকম কত বোকাবোকা দর্শন আমাদের শেখানো হয়! কেন যে এরা বুঝতে চায় না, অনুভূতি নারী, পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধ, যুবক, পশুপাখি, বৃক্ষ ইত্যাদি সবাই জন্মগত পেয়ে থাকে। তবে এই অনুভূতির স্কেল আছে, কারোর স্থূল অনুভূতি আবার কারোর সূক্ষ্ম অনুভূতি। বোধ অনুযায়ী অনুভূতির উচ্চ, মধ্য, নিম্ন গতির প্রকাশ পায়। সাহিত্য এবং সংস্কৃতি মানুষের মধ্যে বোধ সৃষ্টি করে। জাগতিক বোধ, মানবিক বোধ পেরিয়ে পারমার্থিক বোধে উত্তরণ একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। অনুভূতিও সূক্ষ্ম থেকে সূক্ষ্মতম হতে থাকে। প্রশ্ন একটাই কত শতাংশ মানুষ এই প্রক্রিয়ায় স্বেচ্ছায় অংশগ্রহণ করছে! বোধহীন, অনুভূতিহীন মানুষ কি সত্যি মানুষ!" সন্দীপ গোস্বামী
"পিতা-মাতা বা মা-বাবা এঁদের একসাথে দেখতে হয়, একসাথে ভালোবাসতে হয়। যতই আমরা ফ্লিমের জুটি নিয়ে আলোচনা করি, তবু সন্তানের অন্তরে পিতা-মাতার চেয়ে শ্রেষ্ঠ জুটি আর কেউ হতে পারেনা। নারী এবং পুরুষের সাম্য নিয়ে অনেক আলোচনা শোনা যায়, নারীবাদীরা পুরুষতান্ত্রিক সমাজের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। পুরুষদের মধ্যেও নারীদের দুর্বল ভাবার প্রবনতা সত্যি হাস্যকর! ঈশ্বরের সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি নারী, নারীকে তিনি উপহার দিয়েছেন জীব সৃষ্টির অনুপম ম্যাজিক! এই আশীর্বাদের জন্য জীবজগতে প্রকৃতি, পুরুষ এবং পরমাত্মার মহামিলন শুধুমাত্র নারী উপভোগ করতে পারেন। এরজন্য বিশ্বের সকল মা প্রকৃতিগতভাবে সাধিকা। তাই নারী এবং পুরুষের কোন তুলনা হয়না। পুরুষের চেয়ে কোটি গুণ ভাগ্যবতী নারী ! তাই বলে কি পরমপিতা পুরুষদের কিছুই দেয়নি! পুরুষদের দিয়েছেন মুক্ত মন, মুক্তির আনন্দ। অথচ ঈশ্বর নারীকে সর্বোত্তম শক্তির সাথে দিয়েছেন সংসার, বন্ধন, মায়া! তাই মুক্তির আনন্দ নারী চাইলেও, গ্রহণ করতে জন্মগত অক্ষম।" সন্দীপ গোস্বামী
"যখন আমার রবে না গন্ধ, উপস্থিতি না রবে
আশার বাতি জ্বলবে তখন, কবিতা স্মৃতি হবে।"
সন্দীপ গোস্বামী
"সত্য কাকে বলে? এই প্রশ্নের উত্তরে কেউ আমায় বলেছে 'তুমি যাহা বিশ্বাস কর, তাহা সত্য', কেউ বলেছে 'সবাই যাহা বিশ্বাস করে, তাহা সত্য', কেউ বলেছে, 'সবার উপরে মানুষ সত্য' ইত্যাদি। কথাগুলি ভালো লাগলেও আমায় তৃপ্ত করতে পারেনি। এরপর শ্রীমদ্ভাগবদগীতা অধ্যয়ন শুরু করলাম। আজ আমি নির্দ্বিধায় বলতে পারি, ভগবান প্রদত্ত শ্রীগীতা পূর্ণসত্য, এর প্রতিটি অক্ষর সত্য, শ্রীগীতার পথ চিরসত্য। এর বাইরে সবকিছু অর্ধসত্য অথবা মিথ্যা।" সন্দীপ গোস্বামী
"মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যকে নিয়ে গবেষণা করতে করতে যেদিন দুই নয়ন থেকে অবিরাম অশ্রু ঝরে পড়বে, নিজেকে মহাশূন্যে ভেসে বেড়াতে দেখবেন,সেইদিন বুঝবেন শ্রীচৈতন্যের জীবনচরিত কাকে বলে....তথ্য নয়, আধ্যাত্মিক প্রেম এবং জাগতিক দেহের মধ্যে অন্তঃক্রীড়া আস্বাদন বৈষ্ণব সাহিত্যের প্রাণশক্তি। প্রাণের সাথে প্রাণ মিলিয়ে মহাপ্রাণের এই যাদু তাঁর অহেতুক কৃপা না পেলে অসম্ভব। সেই মাহেন্দ্রক্ষণে হারিয়ে যাবে সব বিদ্যা, কবিত্ব, সমাজ বিশ্লেষণ এবং আমিত্ব, আত্মশুদ্ধির এই প্রচেষ্টায় আপনাকে সুস্বাগতম..." সন্দীপ গোস্বামী
"একজন নারী যত দুঃখ, কষ্ট, বঞ্চনা, অপমান, নির্যাতন সহ্য করে হাসি মুখে দায়িত্ব পালন করেন, তার সিকি ভাগ সহ্য করার ক্ষমতা পুরুষের নেই । অথচ এই সমাজ পুরুষতান্ত্রিক!" সন্দীপ গোস্বামী
"এখানে কেউ নেই, ওখানে কেউ নেই। তবু এই দুনিয়ায় তুমি একা নও। কিছু ছায়া প্রতিমুহূর্তে তোমায় অনুসরণ করছে।" সন্দীপ গোস্বামী
"এক শহরে থাকি, এক পাড়ায় থাকি, পাশাপাশি বাড়িতে থাকি, এক বাড়িতে থাকি, তাই আমরা সবাই এক! আরে বাবা! জেলখানায় কয়েদি এবং জেলার একসাথে থাকে, তাই বলে কি তারা এক! একজন সাজাপ্রাপ্ত বন্দী এবং অন্যজন মুক্ত সরকারি বেতনভুক্ত প্রতিনিধি। এবার নিজে বিচার করে দেখুন আপনি এই পৃথিবীতে সাজাপ্রাপ্ত বন্দী নাকি ঈশ্বরের প্রতিনিধি! অন্যের দিকে না তাকিয়ে নিজের জীবনকে সেই অনুযায়ী পরিচালনা করুন, সংশোধিত হবেন নয় প্রমোশন পাবেন।" সন্দীপ গোস্বামী
"আমি তোমায় আকাশ থেকে সূর্য, সপ্তর্ষিমণ্ডল, কালপুরুষ এনে দিতে পারব না । আমি চাই তুমি হয়ে ওঠো সূর্যের মতো দীপ্ত, সপ্তর্ষিমণ্ডলের মতো পবিত্র এবং কালপুরুষের মতো উজ্জীবিত ।" সন্দীপ গোস্বামী
"আমার চারপাশে অজস্র মহান মানুষ গিজগিজ করছেন। একটু ইতিবাচক হন, আপনিও দেখতে পাবেন । বাজারে যে বৃদ্ধ মহিলারা মায়ের ভালোবাসা বুকে নিয়ে শাক সবজি বেচেন, আমি প্রতিদিন তাঁদের মহত্ব উপভোগ করি। যে কৃষক সারাদিন জমিতে কাটিয়ে ফসলের সাথে কথা বলে, তাঁদের মহত্ত্ব আমায় বিস্মিত করে। যে রোয়ারবাজ বেকার যুবক পরম উৎসাহে আগন্তুককে ঠিকানা চিনিয়ে দেয়, তাঁদের মহত্ত্ব আমার বুকে ভালোবাসার জন্ম দেয়। যে রিকশাওয়ালা গাইড হয়ে বিনামূল্যে আমায় নতুন শহরের আনাচে-কানাচে চিনিয়ে দেয়, তাঁদের মহত্ত্ব আমায় শ্রদ্ধায় মাথা নত করে দেয়। যে পাঠক আমার ভাবনা বুকে নিয়ে, একজন থেকে অন্যজন, এক দেশ থেকে অন্য দেশে ছড়িয়ে দেয়, তাঁদের মহত্ত্বকে আমি বারবার প্রণাম করি।" সন্দীপ গোস্বামী
"জীবন মানে প্রতিনিয়ত বিচিত্র সমস্যার সম্মুখীন হওয়া এবং তার সমাধানের চেষ্টা করা। এটা জেনে রাখা ভালো, প্রতিটি সমস্যার প্রাকৃতিক সমাধান আছে। ধৈর্য্য রাখ, পৃথিবী ঘুরছে।" সন্দীপ গোস্বামী
"সুন্দরী মেয়েদের সৌন্দর্য সবাইকে আকৃষ্ট করে, বিশেষভাবে পুরুষদের। তবে তা সাময়িক। সুন্দরী মহিলার কুৎসিত ব্যবহার, আচরণ, অহংকার, ক্রোধ বা ঈর্ষা প্রকাশ্যে দেখলে, তাকে কি আর সুন্দরী লাগে! বরং তিনি অতি কুৎসিত হয়ে ওঠেন...আবার বাহ্যিক কোন সৌন্দর্য নেই, এমন অতিসাধারণ মহিলার আন্তরিকতা, মিষ্টতা, আপন করে নেওয়ার শক্তি থেকে অপূর্ব সৌন্দর্য প্রকাশ পায়, যা আমায় মুগ্ধ করে দেয়। বাহ্যিক সৌন্দর্য এবং অন্তরের সৌন্দর্যের মধ্যে এই ফারাক না বুঝলে সুন্দরের সাধনা করা যায়না।" সন্দীপ গোস্বামী
"মৌলিক ভাবনা বেশিরভাগ মানুষ গ্রহণ করতে পারে না বা চায় না । শিশুবেলা থেকে অর্জিত বিচারধারা তাদের চেতনায় ছড়িয়ে থাকে । কখনও দুর্গের প্রাচীরের মতো জীবনবোধকে অবরুদ্ধ করে রাখে । এটাই স্বাভাবিক । এর বাইরে কেউ কেউ প্রকৃতির অপূর্ব লীলায় মুক্তমনের অধিকারী হন । এরাই এগিয়ে আসেন এবং মৌলিক বিচারধারাকে স্বাগত জানায় । নতুন বিচারধারা সংখ্যালঘুদের হাত ধরে এগিয়ে যেতে থাকে সংখ্যাগরিষ্ঠদের অন্তরে ।" সন্দীপ গোস্বামী
"জীবনে যা করবে তাতে সেরা হওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করবে। আমি নিশ্চিত বলছি, ভাগ্য তোমায় শ্রেষ্ঠ না করলেও কর্ম তোমায় তলানিতে থাকতে দেবেনা। জীবনে প্রকৃত উন্নতি সুনিশ্চিত।" সন্দীপ গোস্বামী
"যুদ্ধ কোন খেলা নয়, যুদ্ধ যুদ্ধ খেলতে নেই। ইতিহাস সাক্ষী যুদ্ধে পরাজিত শক্তির চাইতে জয়ীশক্তির অনেক গুণ বেশি ক্ষতি হয়। এটাই প্রকৃতির অভিশাপ।" সন্দীপ গোস্বামী
"একজন মানুষ বাইরের জগৎ থেকে প্রাপ্ত আঘাত অনায়াসে উপেক্ষা করতে পারে। কিন্তু যখন পরিবারের আপনজনদের থেকে আঘাত আসতে থাকে, তখন মানুষটি ধীরেধীরে ভেঙে পড়ে। অনেক সময় সেই আঘাত মানুষটির মৃত্যুর কারণ হয়ে যায়। কি অদ্ভুত এই বিচিত্র সংসার!" সন্দীপ গোস্বামী
"জীবনে যা করবে তাতে সেরা হওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করবে। আমি নিশ্চিত বলছি, ভাগ্য তোমায় শ্রেষ্ঠ না করলেও কর্ম তোমায় তলানিতে থাকতে দেবেনা। জীবনে প্রকৃত উন্নতি সুনিশ্চিত।" সন্দীপ গোস্বামী
"এই দুনিয়ায় ক্ষুদ্র বলে কিছু নেই, নিজেকে যে বৃহৎ ভাবে, ক্ষুদ্র হল সেই। " সন্দীপ গোস্বামী
"বিদ্যাবুদ্ধি, ধনদৌলত, ক্ষমতা, পুরস্কার, তিরস্কার, অপমান, যন্ত্রণা নয়, জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ অভিজ্ঞতা। অভিজ্ঞতা যে কোন পরিস্থিতিতে মানুষকে শান্ত রাখে, নতুন পথের সন্ধান দেয়।" সন্দীপ গোস্বামী
"যত ঘনিষ্ঠ তত অনিষ্ট। ঘোর কলির এটাই মহামন্ত্র!" সন্দীপ গোস্বামী
"জপে বিদ্যা, জপে সমৃদ্ধি, জপেতে মেলে শক্তি।
জপে সাধনা, জপে শান্তি,
জপেতে পাও ভক্তি।।" সন্দীপ গোস্বামী
No comments:
Post a Comment